Islam & Secularism Bengali | ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও ইসলাম

Secularism and Islam Bengali | ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও ইসলাম


ড. মানে‘ ইবন হাম্মাদ আল-জুহানী
অনুবাদ : মুহাম্মদ নূরুল্লাহ তারীফ
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
More Source: Islamhouse.com

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও ইসলাম
Secularism শব্দের সঠিক অনুবাদ হচ্ছে- ধর্মহীনতা। তবে বাংলা ভাষায় শব্দটির অনুবাদ তা না করে করা হয়ে থাকে ধর্মনিরপেক্ষতা। বস্তুত এ মতবাদটি ধর্মকে এড়িয়ে নিছক বস্তুবাদী স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে মানববিদ্যা ও বুদ্ধির ভিত্তিতে মানবজীবন প্রতিষ্ঠার প্রতি আহ্বান করে। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি বলতে বুঝানো হয় - ধর্মের প্রভাবমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা। এ মতবাদটি ১৭শত শতাব্দীতে ইউরোপে আত্মপ্রকাশ করে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এটি প্রাচ্যে প্রসারিত হয়। প্রথমদিকে মিসর, তুরস্ক, ইরান, লেবানন, সিরিয়াতে প্রসার লাভ করে। ধীরে ধীরে তিউনিশিয়াতে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে ইরাকে প্রসারিত হয়। এছাড়া বিংশ শতাব্দীতে এসে অন্যান্য আরব দেশগুলোতেও বিস্তার লাভ করে।

Secularism and Islam Bengali Language ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও ইসলাম
আরব বিশ্বে এই মতবাদকে বুঝাতে ‘লা-দ্বীনিয়্যাহ্‌’ (لا دينية) বা ‘ধর্মহীনতা’ বলার কথা থাকলেও এ মতবাদের প্রবর্তকরা সে শব্দটির পরিবর্তে ‘ইলমানিয়্যাহ্‌’ (علمانية) বা ‘বিজ্ঞানময়’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। প্রথম দৃষ্টিতে কারও কারও মতে হতে পারে যে শব্দটি বোধ হয় ‘ইলম’ তথা ‘জ্ঞান’ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। বস্তুত বিষয়টি এ রকম নয়। এ মতবাদের সাথে বিজ্ঞান বা Science এর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তারা এ শব্দটি ব্যবহারে বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করে; কারণ শব্দটিকে জ্ঞানের দিকে সম্পর্কযুক্ত করতে পারলে আরব সমাজে অপেক্ষাকৃত কম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। তাই এ বিভ্রান্তির নিরসনার্থে শব্দটিকে আরবীতে ‘ইলমানিয়্যাহ্‌’ উচ্চারণ না করে ‘আলামানিয়্যাহ’ বলা উচিত।
আমরা আগেই বলেছি যে, এ মতবাদের উৎপত্তিস্থলে তার জন্য Secularism শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার অর্থ হচ্ছে ধর্মহীনতা বা ধর্মের সাথে সম্পর্কহীন। কিন্তু বাংলাভাষাভাষি মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এর একটি ভুল অনুবাদ করা হয়ে থাকে, আর বলা হয় যে, এর অর্থ, ধর্মনিরপেক্ষতা। 
আমরা এ প্রবন্ধে এটাকে এ প্রচলিত অর্থেই বর্ণনা করব। পাঠকগণ অবশ্যই সেটাকে তার আসল অর্থে বুঝে নিবেন।  
Secularism যাকে ধর্মনিরপেক্ষতা বলা হয়ে থাকে, তার সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা হচ্ছে- রাষ্ট্রীয় ও সমাজিক জীবন থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা। ধর্ম ব্যক্তির অন্তরের খাঁচায় বন্দি থাকবে। ধর্মের পরিধি ব্যক্তি ও তার উপাস্যের সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। ধর্মকে প্রকাশ করার কোনো সুযোগ থাকলে সেটা শুধুমাত্র উপাসনাতে এবং বিবাহ ও মৃত্যু সংক্রান্ত রসম-রেওয়াজে।
রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা রাখার ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে খ্রিস্টান ধর্মের মিল রয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা থাকবে কায়সার (খ্রিস্টান সরকার প্রধানের উপাধি) এর হাতে, আর গির্জার ক্ষমতা থাকবে আল্লাহর হাতে। যীশুর নামে প্রচারিত বাণী ‘‘কায়সারের অধিকার কায়সারকে দাও এবং আল্লাহর অধিকার আল্লাহকে দাও’’ থেকেও এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। কিন্তু ইসলাম এ ধরনের দ্বিমুখী নীতির অনুমোদন করে না। মুসলিম নিজেও আল্লাহর মালিকানাধীন এবং তার গোটা জীবনও আল্লাহর জন্য। কুরআনে কারীমে এসেছে ‘‘হে রাসূল! আপনি বলুন, নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য।’’[সূরা আন‘আম: ১৬২]
ধর্মনিরপেক্ষতার উৎপত্তি ও উল্লেখযোগ্য ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিত্বঃ 
এই মতবাদটি প্রথমে ইউরোপে প্রসার লাভ করে। তারপর প্রাশ্চাত্যের উপনিবেশ শাসন ও কমিউনিজমের প্রভাব-প্রতিপত্তির সুবাদে বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিস্তার লাভ করে। ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সে শিল্প বিপ্লবের আগে ও পরের বেশকিছু পরিস্থিতি ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপক প্রসার ঘটায় এবং ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ও চিন্তাধারার বিকাশ ঘটায়। নিম্নে উল্লেখিত ক্রমধারায় ঘটনাগুলো ঘটেছেঃ
এক্লিরোস, বৈরাগ্যবাদ, ঐশ্বরিক নৈশভোজ (Holy Communion), ক্ষমাপত্র (Indulgence) বিক্রি ইত্যাদির আড়ালে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বগণ তাগুতী শক্তি, পেশাদার রাজনীতিবিদ ও স্বৈরাচারে পরিণত হয়েছিল।

গির্জাগুলোর বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে অবস্থান, মানুষের চিন্তাধারার উপর গির্জার একচ্ছত্র আধিপত্য, গির্জা কর্তৃক Inquisition কোর্ট গঠন করা এবং বিজ্ঞানীদেরকে ধর্মদ্রোহী হিসেবে অভিযুক্তকরণ। উদাহরণতঃ-
কোপার্নিকাস (Copernicus) : ১৫৪৩ সালে ‘‘আকাশে গ্রহ নক্ষত্রের আবর্তন’’ নামক একটি বই প্রকাশ করেন। গির্জা কর্তৃক বইটি নিষিদ্ধ করা হয়।
গ্যালিলিও (Galileo): টেলিস্কোপ আবিস্কার করার কারণে ৭০ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানীর ওপর কঠোর নির্যাতন নেমে আসে। ১৬৪২ সালে তিনি মারা যান। 
স্পিনোজা (Spinoza): তিনি ইতিহাস সমালোচনার প্রবক্তা ছিলেন। তাঁর শেষ পরিণতি হয়েছিল তরবারীর আঘাতে মৃত্যুদণ্ড।
জন লক (John Lock) : তিনি দাবী উত্থাপন করেছিলেন যে, স্ববিরোধিতা পাওয়া গেলে ঐশীবাণীর বিপক্ষে বিবেকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
বিবেকবুদ্ধি ও প্রকৃতি নীতির উদ্ভবঃ ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিবর্গ বিবেকের মুক্তির দাবী তোলেন এবং প্রকৃতিকে উপাস্যের বিশেষণে বিশেষিত করার দাবী জানান।
ফরাসি বিপ্লবঃ গীর্জা ও নতুন এ আন্দোলনের মাঝে দ্বন্দের ফলে ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সে একটি সরকার গঠিত হয়। জনগণের শাসনের নামে এটাই ছিল প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ সরকার। কেউ কেউ মনে করেন যে, ফ্রিমেশন (Freemasons) এর সদস্যরা গির্জা ও ফরাসি সরকারের ত্রুটিগুলোকে পুঁজি করে বিদ্রোহ ঘটায় এবং যতদূর সম্ভব তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার প্রয়াস চালায়। এ বিপ্লবের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, গ্রন্থ ও প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, 
জঁ-জাক রুশো (Jean Jacques Rousseau) মৃত্যু ১৭৭৮ খ্রিঃ - Social Contract (সামাজিক চুক্তি, অনুবাদ: ননীমাধব চৌধুরী) নামে তাঁর একটি গ্রন্থ রয়েছে। ফরাসি বিপ্লবের ক্ষেত্রে এ গ্রন্থটি ইঞ্জিলের মর্যাদায় ছিল।
 মনটাসকিউ (Montesquieu) এর রচিত গ্রন্থ The Spirit of Laws.
ইহুদী ধর্মাবলম্বী স্পিনোজা (Spinoza) কে ধর্মনিরপেক্ষতার পথিকৃত মনে করা হয়। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতাকে জীবন ও আচার আচরণের পদ্ধতি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। ইশ্বরতত্ত্ব ও রাজনীতি নিয়ে তাঁর রচিত একটি পুস্তিকা রয়েছে। 
প্রাকৃতিক আইনের প্রবক্তা ভলটেয়ার (Voltaire): তাঁর রচিত বই হচ্ছে- ‘‘বিবেকের গন্ডিতে ধর্ম’’ (১৮০৪ খ্রিঃ)।
 উইলিয়াম গডউইন (William Godwin) (১৭৯৩খ্রিঃ): তাঁর রচিত গ্রন্থ হচ্ছে- Political Justice (রাজনৈতিক ন্যায়পরায়নতা)। এই গ্রন্থে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে তাঁর আহবান সুস্পষ্ট।
মিরাবোঁ (Mirabeau): যাঁকে ফরাসি বিপ্লবের প্রবক্তা, নেতা ও দার্শনিক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
বাস্তিল (Bastille) ধ্বংস করার দাবী নিয়ে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে তাদের শ্লোগান ছিল- ‘‘রুটি চাই’’। পরবর্তীতে এ শ্লোগান ‘‘স্বাধীনতা, সম অধিকার ও ভ্রাতৃত্ব’’ তে পরিবর্তিত হয়। এটি মূলতঃ ফ্রিমেশন এর শ্লোগান। তাদের আরেকটি শ্লোগান ছিল ‘‘পশ্চাৎমুখিতার পতন হোক’’। এর দ্বারা তারা ধর্মের পতনকে উদ্দেশ্য করে। এই শ্লোগান দিয়ে ইয়াহূদীরা একটা হট্টগোল বাধিয়ে দেয়, এর মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রের কর্ণধারদের সাথে তাদের দূরত্ব নির্মূল করার চেষ্টা করে এবং ধর্মীয় বিরোধগুলো মিটিয়ে দেয়ার প্রয়াশ চালায়। এভাবে ফরাসি বিপ্লব ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিবর্তে খোদ ধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রূপ ধারণ করে।   
ধর্মবিমুখ বিভিন্ন মতবাদের উদ্ভব: স্যাকুলারিজমের উদ্ভবের পেছনে বেশ কিছু ধর্মবিমুখ- ধর্মবিদ্বেষী মতবাদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি মতবাদের উল্লেখ করা হলো: 
বিবর্তনবাদ: ১৮৫৯ সনে ডারউইন (Charles Darwin) এর বই The Origin of Species (প্রজাতির উৎপত্তি, অনুবাদক- অধ্যাপক ম. আখতারুজ্জামান) প্রকাশিত হয়েছে। এই গ্রন্থে ডারউইন প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural Selection) এবং বংশগতি তত্ত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন। মানুষের আসল পূর্বপুরুষ হিসেবে একটি অনুজীবকে চিহ্নিত করা হয়। যে অনুজীবটি মিলিয়ন মিলিয়ন বছর একটি বদ্ধ ডোবাতে ছিল। বিবর্তনের ফলে এটি এক পর্যায়ে বানর এবং শেষ পর্যায়ে মানুষে পরিবর্তিত হয়। বিবর্তনবাদ ধর্মীয় বিশ্বাসকে উচ্ছেদ করে নাস্তিকতার বিস্তার ঘটায়। ইয়াহূদীরা সুকৌশলে এই মতবাদকে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করে।
নিতশার (Nietzsche) দর্শনের উদ্ভব: দার্শনিক নিতশা দাবী করেন- ইশ্বরের মৃত্যু হয়েছে। মানুষ হচ্ছে সুপারম্যান। মানুষকে ইশ্বরের স্থলাভিষিক্ত হওয়া উচিত।
দুরখীম (ইয়াহূদী) এর দর্শন: তিনি সামষ্টিক বিবেক (Group mind) তত্ত্বের ভিত্তিতে মানুষদেরকে জন্তু ও বস্তু সত্তার সম্মিলিত রূপ বলে মত প্রকাশ করেন।
ফ্রুয়েড (Freud) (ইয়াহূদী) এর দর্শন: তিনি বস্তুজগতের সবকিছুতে যৌন বাসনাকে মূল প্রেরণা মনে করেন এবং তাঁর দৃষ্টিতে মানুষ নিছক যৌনাকাঙ্ক্ষী প্রাণী।
কার্ল মার্ক্স (Karl Marx) (ইয়াহূদী) এর দর্শন: তিনি বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করেন। মার্ক্স ‘‘অনিবার্য বিবর্তন’’ তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন। তিনি কমিউনিজমের প্রচারক ও প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ধর্মকে জাতিসমূহের আফিম হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
জঁ-পল সার্ত্র্ (Jean-Paul Sartre) তাঁর Existentialism নামক গ্রন্থে ও কলিং উইলসন (Colin Wilson) তাঁর The Outsider নামক গ্রন্থে অস্তিত্ববাদ (existentialism) ও নাস্তিক্যবাদের প্রতি আহবান জানান।

আরব ও ইসলামী বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কিছু নমুনা:
মিসর: নেপোলিয়ন বোনাফোর্ট এর আক্রমনের সাথে মিসরে ধর্মনিরপেক্ষতার অনুপ্রবেশ ঘটে। আল-জিবরিতি তাঁর ইতিহাসগ্রন্থে (মিসরের উপর ফরাসি হামলা ও সংশ্লিষ্ট ঘটনাপ্রবাহ শীর্ষক অংশে) এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি তাঁর লেখায় এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন যা স্যাকুলারিজম তথা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের অর্থ বহন করে। যদিও তিনি এ শব্দটি সরাসরি ব্যবহার করেননি। যিনি সর্বপ্রথম ‘ইলমানিয়্যাহ্‌’ বা স্যাকুলারিজম পরিভাষাটি ব্যবহার করেছেন তিনি হচ্ছেন- কাতারের অধিবাসী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ইলিয়াস; ১৮২৭ সালে প্রকাশিত আরবী-ফরাসি অভিধানে। খিদীভ (মিশরের শাসকদের উপাধি) ইসমাঈল ১৮৮৩ সালে ফ্রান্সের আইন মিসরে প্রবেশ করান। এই খিদীভ প্রাশ্চাত্য-সংস্কৃতির অন্ধভক্ত ছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল মিসরকে ইউরোপের একটি টুকরোতে পরিণত করবেন।
ভারত: ১৭৯১ সাল পর্যন্ত ভারতে ইসলামি আইন (শরিয়া) মোতাবেক শাসনকার্য পরিচালিত হয়েছে। এরপর ইংরেজদের প্ররোচনায় ক্রমান্বয়ে ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা শুরু হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সম্পূর্ণভাবে ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা হয়।
আলজেরিয়া: ১৮৩০ সালে ফ্রান্স কর্তৃক উপনিবেশ শাসনের স্বীকার হওয়ার পর ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা হয়।
তিউনিশিয়া: ১৯০৬ সালে তিউনিশিয়াতে ফ্রান্সের আইন স্থান করে নেয়।
মরক্কো: ১৯১৩ সালে মরক্কোতে ফ্রান্সের আইন অনুপ্রবেশ করে।
তুরস্ক: ইসলামি খেলাফত বিলুপ্ত হওয়ার পর এবং মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক কর্তৃক সর্বক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের পর তুরস্ক স্যাকুলারিজমের চাদর পরিগ্রহ করে করে। যদিও তারও আগ থেকেই কিছু কিছু লক্ষণ ও কর্মকাণ্ড দেখা দিয়েছিল।
ইরাক ও সিরিয়া: উসমানী খিলাফত আমলে ইরাক ও সিরিয়া থেকে ইসলামি আইন বিলুপ্ত করা হয় এবং সেখানে ইংরেজ ও ফরাসিদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
আফ্রিকার অধিকাংশ অঞ্চল: দখলদার ঊপনিবেশী শক্তির পতনের পর আফ্রিকার অনেক দেশে খ্রিস্টান রাষ্ট্রপ্রধানেরা ক্ষমতা দখল করে নেয়।
ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ স্যাকুলার রাষ্ট্র।
স্যাকুলার ও জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলের প্রসার: বার্থ পার্টি, সিরিয়ান জাতীয়তাবাদী দল, ফেরাউনি মতবাদ, তুরানি মতবাদ, আরব জাতীয়তাবাদ।   

আরব ও মুসলিম বিশ্বে উল্লেখযোগ্য স্যাকুলার ব্যক্তিবর্গ: 
আহমাদ লুতফি সৈয়দ, ইসমাঈল মাযহার, কাসেম আমীন, ত্বাহা হোসাইন, আব্দুল আযিয ফাহমি, মিশেল আফলাক, আন্তুন সাদাত, সূকর্ণ, সুহার্তু, নেহেরু, মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক, জামাল আব্দুন নাসের, ‘‘রাজনীতিতে ধর্ম নেই; ধর্মে রাজনীতি নেই’’ এই শ্লোগানের প্রবক্তা আনোয়ার সাদাত, ড. ফুয়াদ যাকারিয়া, ড. ফারাজ ফৌদাহ প্রমুখ।
স্যাকুলারদের চিন্তাধারা ও বিশ্বাসাবলী:
কিছু ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি আল্লাহর অস্তিত্বকেও অস্বীকার করে। তাদের কেউ কেউ আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস রাখলেও আল্লাহর অস্তিত্বের সাথে মানুষের জীবনের কোনরূপ সম্পর্ক আছে বলে তাঁরা বিশ্বাস করে না।
নিছক বিজ্ঞানের ভিত্তিতে এবং বিবেক ও অভিজ্ঞতার শাসনাধীনে মানবজীবন প্রতিষ্ঠিত হবে।
আধ্যাত্মিক জগৎ ও বস্তুজগতের মধ্যে দুর্ভেদ্য ব্যবধান তৈরী করা। তাদের দৃষ্টিতে আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ নেতিবাচক মূল্যবোধ।
ধর্মকে রাজনীতি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন রাখা এবং নিরেট বস্তুবাদী ভিত্তির উপর জীবন প্রতিষ্ঠিত করা। 
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে pragmatism (সুবিধাবাদ) প্রতিষ্ঠা করা।
শাসন, রাজনীতি ও নীতি নৈতিকতার ক্ষেত্রে ম্যাকিয়াভেলীর সূত্র অনুসরণ করা।
অশ্লীলতা ও চারিত্রিক অবক্ষয় ছড়িয়ে দেয়া এবং পারিবারিক ভিত ভেঙ্গে দেয়া। যেহেতু পরিবার হচ্ছে সামাজিক বন্ধনের প্রথম বীজ।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মিশনারী সংস্থাগুলোর অপচেষ্টায় আরব ও মুসলিম বিশ্বে প্রচারিত ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বাসগুলো হচ্ছে- 
- ইসলাম, কুরআন ও নবুয়তের মূলে আঘাত করা।
- এ দাবী করা যে, ইসলামের আবেদন নিঃশেষ হয়ে গেছে। ইসলাম কিছু আধ্যাত্মিক পূজা-অর্চনা ছাড়া কিছু নয়।
- এ দাবী করা যে, ইসলামী ফিকহ বা ইসলামী আইন শাস্ত্র রোমান আইন থেকে উদ্ভুত।
- এই দাবী তোলা যে, ইসলাম বর্তমান সভ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলাম মানুষকে পশ্চাৎমুখী হওয়ার আহবান জানায়।
- পাশ্চাত্য চিন্তাধারার আলোকে নারীমুক্তির আহবান জানানো।
- ইসলামী সভ্যতাকে বিকৃতভাবে পেশ করা। ইসলামের ইতিহাসে সংঘটিত ধ্বংসাত্মক আন্দোলনগুলোকে অতিরঞ্জিতভাবে প্রচার করা এবং এ আন্দোলনগুলোকে সংস্কারমূলক আন্দোলন হিসেবে দাবী করা।
- প্রাচীন সভ্যতাগুলোকে পুনর্জীবিত করার চেষ্টা করা।
- পাশ্চাত্যের ধর্মহীন আইনকানুন ও কারিকুলাম আমদানী করা এবং নিজেদের কর্মকাণ্ডে পাশ্চাত্যের ধারা চালু করা।
- নতুন প্রজন্মকে ধর্মহীন প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তোলা।
স্যাকুলারিজম কি মুসলিম সমাজে গ্রহণযোগ্য? 
পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে স্যাকুলারিজম বা ধর্মহীনতা বিকাশের কোনো কারণ যদি থেকেও থাকে কোনো মুসলিম দেশে তা বিকাশের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কেননা কোনো খ্রিস্টানকে যখন মানবরচিত সিভিল ল’ দিয়ে শাসন করা হয় তখন সে অল্প বা বিস্তর বিরক্ত হয় না। কারণ এতে করে সে এমন কোনো কিছুকে অকেজো করছে না যা মান্য করা তার ধর্ম তার উপর আবশ্যক করে দিয়েছে; কেননা তাঁর ধর্মে জীবনবিধান হিসেবে কিছু নেই। কিন্তু মুসলিমের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। মুসলিমের ঈমানই তাঁকে আল্লাহর আইনের শাসন গ্রহণে বাধ্য করে। 
তাছাড়া - যেমন ড. ইউসুফ আল-কারাদাভী বলেন- ধর্ম থেকে রাজনীতিকে বিচ্ছিন্ন রাখা হলেও খ্রিস্টান ধর্ম তার প্রভাব প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাতে অটুট থাকবে এবং খ্রিস্টান ধর্মরক্ষী পোপ, ফাদার, মাদার ও ধর্মপ্রচারকগণ বিনা প্রতিবন্ধকতায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। পক্ষান্তরে মুসলিম দেশে যদি এ মতবাদ চালু করা হয় তাহলে ইসলাম শক্তিহীন ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়বে। কারণ ইসলাম কোনো ব্যক্তির জন্য পোপ, যাজক, এক্লিউরিস এর মত আধিপত্য অনুমোদন করে না। ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রাঃ) ঠিকই বলেছেন- ‘‘আল্লাহ তাআলা শাসককে দিয়ে যা বাস্তবায়ণ করান, কুরআন দিয়ে তা বাস্তবায়ণ করান না।’’

স্যাকুলার মতবাদের আদর্শিক ও বিশ্বাসগত শেকড়ঃ
প্রথমতঃ গির্জার সাথে শত্রুতা। দ্বিতীয়ত ধর্মের সাথে শত্রুতা, চাই সে ধর্ম বিজ্ঞানের পক্ষে অবস্থান নিক অথবা বিজ্ঞানের বিপক্ষে অবস্থান নিক।
স্যাকুলারিজম প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ইয়াহূদীদের বড় ভূমিকা রয়েছে; যাতে করে তারা এর মাধ্যমে তাদের ও বিশ্বের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার ধর্মীয় দেয়াল নির্মূল করতে পারে।
আলফ্রেড ওয়াইট হু বলেন: ‘‘যে ইস্যুতেই ধর্ম বিজ্ঞানের বিরোধিতা করেছে সেখানে বিজ্ঞানের অভিমতই সঠিক পাওয়া গেছে এবং ভুল সবর্দা ধর্মের মিত্র।’’ যদি এ উক্তিটি ইউরোপে প্রচলিত জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারে সঠিক হয়েও থাকে, ইসলামের ব্যাপারে এ বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যাত এবং কোনো বিবেচনায় সঠিক নয়। কারণ ইসলাম ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণিত তত্ত্বগুলোর মাঝে কোনো সংঘর্ষ নেই। ইসলাম ও বাস্তব বিজ্ঞানের মাঝে কখনো কোনো বিরোধ বাঁধেনি, খ্রিস্টান ধর্মের সাথে যেরূপ বিরোধ বেঁধেছিল। একজন সাহাবী থেকে একটি উক্তি বর্ণিত আছে- ‘‘ইসলাম যা আদেশ দিয়েছে সে বিষয়ে বিবেক কখনো বলেনি যে, হায়! এ ব্যাপারে যদি নিষেধ করা হত। অথবা ইসলাম যা থেকে বারণ করেছে সে বিষয়ে বিবেক কখনো বলেনি যে, হায়! ইসলাম যদি এ ব্যাপারে আদেশ দিত।’’ বৈজ্ঞানিক বাস্তব তত্ত্ব-উপাত্তগুলো এ উক্তিকে সত্য প্রমাণিত করে। পাশ্চাত্যের একদল বিজ্ঞানীও এ কথার স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাঁদের মুখনিসৃত শত শত উক্তির মাধ্যমে ইসলামের এই বৈশিষ্টের প্রতি তাঁদের অনুরক্ততা ও এ বৈশিষ্টের সত্যতা প্রকাশ পেয়েছে।   
‘‘বিজ্ঞান ও ধর্মের মাঝে শত্রুতা’’ এই দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যাপকতা প্রদান, যাতে এর আওতায় ইসলামও এসে যায়। অথচ ইসলাম গির্জার ন্যায় জীবন ও বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। বরং অভিজ্ঞতাবাদ পদ্ধতি (empirical method) প্রয়োগে ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারে ইসলামই ছিল অগ্রণী।
আখেরাতকে অস্বীকার করা এবং আখেরাতের জন্য আমল না করা এবং এ বিশ্বাস রাখা যে, ভোগ ও উপভোগের জন্য দুনিয়ার জীবনই একক ক্ষেত্র।

ইসলাম কেন স্যাকুলারিজম (ধর্মনিরপেক্ষতা) প্রত্যাখান করে?
স্যাকুলারিজম (ধর্মহীনতা) যা আমাদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা নামে প্রসিদ্ধ তা মানব প্রকৃতির একটি বিশেষ দিককে উপেক্ষা করে। দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে মানুষের সৃষ্টি। ধর্মনিরপেক্ষতা মানুষের দেহের চাহিদা পূরণের উপর গুরুত্বারোপ করে। কিন্তু আত্মার চাহিদার প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করে না।
পাশ্চাত্যের ঐতিহাসিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এ মতবাদটির উৎপত্তি হয়েছে। আমরা প্রাচ্যবাসীদের নিকট এটি একটি সম্পূর্ণ অপরিচিত অজানা অচেনা চিন্তাধারা বৈ কিছু নয়।
ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে সম্পূর্ণ আলাদা করে ফেলে। যার ফলে ব্যক্তিতন্ত্র, জাতেভেদ তথা উঁচুনীচু বৈষম্য, বর্ণবৈষম্য, মতবাদভিত্তিক বিভেদ, গোত্রীয় বিভেদ, জাতীয়তাভিত্তিক বিভেদ, দলাদলি, শ্রেণী বৈষম্য ইত্যাদির উন্মেষ ঘটে।
এই মতবাদ নাস্তিকতা, পাশবিকতা, বিচ্ছিন্নতা, দুর্নীতি, প্রজন্মের বিনাশ ইত্যাদির প্রসার ঘটায়।
ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদেরকে পাশ্চাত্যের বিবেক দিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করে। যার ফলে আমরা নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশাকে নিন্দা করব না। আমরা মুসলিম সমাজের স্বভাব-চরিতকে ভুলুণ্ঠিত করব এবং অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য সমাজের রুদ্ধদারকে খুলে দেব। ধর্মনিরপেক্ষতা সুদী কারবারের বৈধতা দেয় এবং সিনেমা, নাটক, চলচ্ছিত্র ইত্যাদি শিল্প হিসেবে অতি মর্যাদা দেয়। ধর্মনিরপেক্ষতার ছায়াতলে প্রত্যেক মানুষ অন্যের ক্ষতি করে হলেও নিজের স্বার্থসিদ্ধির প্রয়াস চালায়।
ধর্মনিরপেক্ষতা পাশ্চাত্য সমাজের সমস্যাগুলো আমাদের সমাজে টেনে আনে। যেমন পরকালের হিসাবনিকাশকে অস্বীকার করা। যার ফলশ্রুতিতে মানুষ ধর্মীয় ভাবধারার বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত হয়ে জাগতিক রিপু যেমন- লোভলালসা, ব্যক্তিস্বার্থ, অস্তিত্বের লড়াই ইত্যাদি দ্বারা তাড়িত হয়ে জীবন যাপন করে; সেখানে আত্মার বিবেচনা একেবারে শূণ্য।
ধর্মনিরপেক্ষতা বিকাশ ঘটলে জাগতিক জ্ঞানের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়; যে জ্ঞান অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ নির্ভর। গায়েবী বিষয়াবলীকে উপেক্ষা করা হয়। যেমন আল্লাহর উপর ঈমান, পূণরুত্থান, পূণ্য ও পাপ। এর ফলে এমন এক সমাজের উদ্ভব ঘটে যে সমাজের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে- দুনিয়ার ভোগ ও সস্তা সব খেলতামাশা।   

ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসার ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির কেন্দ্রবিন্দু
ধর্মনিরপেক্ষতার উৎপত্তি ইউরোপে। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা রাজনৈতিক অস্তিত্ব অর্জন করে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে গোটা ইউরোপ জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষতা বিস্তার লাভ করে। বিংশ শতাব্দীতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মিশনারীর প্রভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে রাজনীতি ও শাসনকার্যে ধর্মনিরপেক্ষতা ছড়িয়ে পড়ে।
উপসংহার
পূর্বের আলোচনা থেকে এ কথা পরিস্কার যে - রাষ্ট্রীয় জীবন ও সামাজিক জীবন থেকে ধর্মকে বহিষ্কার করে জাগতিক জ্ঞান ও বিবেকবুদ্ধির ভিত্তিতে জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার আহবানই- ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের মতে, ধর্ম মানুষের মনের খাঁচায় বন্দি থাকবে, খুবই সীমাবদ্ধ পরিসরে ধর্মকে প্রকাশ করা যাবে। অথচ যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের পরিবর্তে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়তকে আইন হিসেবে গ্রহণ করে না এবং আল্লাহ তাআলা যা কিছু হারাম করেছেন সেগুলোকে সে নিষিদ্ধ করে না- সে মুরতাদ, সে মুসলিম নয়। দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে তার যুক্তি খণ্ডন করা ও তাকে তওবা করার আহ্বান জানানো ওয়াজিব- যেন সে ইসলামে ফিরে আসার সুযোগ পায়। অন্যথায় ইহকালে ও পরকালে তার ব্যাপারে ইসলাম ত্যাগকারী মুরতাদের বিধান প্রযোজ্য হবে।

নিম্নোক্ত রেফারেন্সগুলো হতে আরো বিস্তারিত জানুন:
জাহিলিয়াতুল কারনিল ইশরিন (বিংশ শতাব্দীর জাহেলিয়াত), লেখক: মুহাম্মদ কুতুব।
আলমুস্তাকবাল লি হাযাদ্বীন (এই দ্বীনের ভবিষৎ), লেখক: সাইয়েদ কুতুব।
তাহাফুতুল ইলমানিয়্যাহ (ধর্মনিরপেক্ষতার অসারতা), লেখক: এমাদুদ্দীন খলিল।
আল ইসলাম ওয়াল হাদারাতুল গারবিয়্যাহ (ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতা), লেখক: মুহাম্মদ মুহাম্মদ হোসাইন
আল-ইলমানিয়্যাহ (ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ), লেখক: সাফার ইবনে আব্দুর রহমান আলহাওয়ালী
তারিখুল জামইয়্যত আসসিরিয়্যাহ ওয়াল হারাকাত আলহাদ্দামাহ (গোপন সংগঠন ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলনগুলোর ইতিহাস), লেখক: মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আনান।
আলইসলাম ও মুশকিলাতুল হাদারাহ (ইসলাম ও সভ্যতার দ্বন্ধ), লেখক: সাইয়েদ কুতুব।
আলগা-রাহ আলাল আলাম আল ইসলামী (মুসলিম বিশ্বের উপর হামলা), অনুবাদ: মুহিববুদ্দীন আলখতীব ও মুসাঈদ আলইয়াফী।
আল-ফিকর আল-ইসলামী ফি মুওয়াজাতিল আফকার আলগারবিয়্যাহ (ইসলামী চিন্তাধারা বনাম পাশ্চাত্য চিন্তাধারা), লেখক: মুহাম্মদ আল-মুবারক।
আল-ফিকর আল-ইসলামী আলহাদীস ওয়া সিলাতুহু বিল ইসতিমার আলগারবি (আধুনিক ইসলামী চিন্তাধারা ও পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদের সাথে এর সম্পর্ক), লেখক: মুহাম্মদ আল-বাহী।
আলইসলাম ওয়াল ইলমানিয়া ওয়াজহান বি ওয়াজহ (ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা পরস্পর মুখোমুখি), লেখক: ড. ইউসুফ কারাদাবী।
আলইলমানিয়া: আন্নাশআ ওয়াল আছার ফিশ শারকি ওয়াল গারব (ধর্মনিরপেক্ষতা: উৎপত্তি, প্রাচ্যে ও পাশ্চাত্যে এর প্রভাব), লেখক: যাকারিয়া ফায়েদ।
ওজুবু তাহকিমুস শরিয়া ইসলামিয়া লিল খুরুজে মিন দায়িরাতিল কুফর আলই‘তিকাদি (কুফরী বিশ্বাসের গন্ডি থেকে বেরোবার জন্য ইসলামি শরিয়া মোতাবেক শাসনকার্য পরিচালনার আবশ্যকতা), লেখক: ড. মুহাম্মদ শাত্তা আবু সাদ, কায়রো, ১৪১৩হিঃ
জুযুরুল ইলমানিয়্যাহ (ধর্মনিরপেক্ষতার গোড়ার কথা), লেখক: ড. আসসাইয়েদ আহমাদ ফারাজ, দারুল ওফা, আলমানসুরা, ১৯৯০ খ্রিঃ
ইলমানি ওয়াল ইলমানিয়া (ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মনিরপেক্ষতা), লেখক: ড. আসসাইয়েদ আহমাদ ফারাজ, ১৯৮৬ খ্রিঃ

সমাপ্ত

Post a Comment

0 Comments